গ্রাহকের অসুস্থতার সুযোগে টাকা আত্মসাৎ করলেন দুই ব্যাংক কর্মকর্তা

1486

ফেনীর সোনাগাজীতে সোনালী ব্যাংক শাখার দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত নারী গ্রাহক রৌশন আরা বেগম মঙ্গলবার দুদক চেয়ারম্যান, সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সরকারি বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে রৌশন আরা বেগম উল্লেখ করেন, সোনালী ব্যাংক সোনাগাজী শাখার একজন নিয়মিত গ্রাহক তিনি। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিবার কল্যাণ সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর তিনি অবসর গ্রহণ করেন।

এরপর তার মাসিক পেনশন, চিকিৎসা ও উৎসব ভাতা বাবদ উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিস থেকে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর ৫৮ হাজার ৮৩৬ টাকার অ্যাডভাইসে গ্রহণ করেন। একই অ্যাডভাইসে আরো দুইজন নারী নমিতা রানী রায় ও লক্ষী রানী বসাকেরসহ তিনজনের মোট ১ লাখ ৮০ হাজার ৯২৪ টাকার হিসাব ছিল।

ওই দিন দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি (রৌশন আরা বেগম) ব্যাংকে গিয়ে যাবতীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর করে সোনালী ব্যাংক সোনাগাজী শাখার ক্যাশ শাখার কর্মকর্তা বরুণ কুমারের কাছ থেকে টাকা উঠানোর জন্য কাগজপত্র জমা দেন। বরুণ কুমার টাকা দিতে একটু দেরি হবে বলে তাদেরকে অপেক্ষা করতে বলেন।

এর মধ্যে তিনি হঠাৎ শারীরিকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে বরুন কুমারকে তার সোনালী ব্যাংক হিসাব নং- ৪০১৭১০০১৪১০৭৫-তে টাকাগুলো জমা দেয়ার জন্য বলে একটি সাদা কাগজে তার হিসাব নাম্বারটি লিখে দিয়ে বাসায় চলে যান। পরবর্তীতে তিনি আর খোঁজ নেননি।

রৌশন আরা বেগম জানান, গত ২২ জানুয়ারি তিনি ব্যাংকে টাকা উঠাতে গিয়ে  জানতে পারেন অ্যাকাউন্টে ৫৮ হাজার ৮৩৬ টাকা জমা হয়নি। তাৎক্ষণিক তিনি বিষয়টি শাখার ব্যবস্থাপক ফরহাদ উদ্দিনকে অবহিত করেন। তিনি কর্মকর্তাদেরকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিষয়টি সমাধান করবেন বলে তাকে আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে তার ছেলে শাহ আজিজুর রহমানকে নিয়ে সোমবার ব্যাংকে গেলে তিনি (ব্যবস্থাপক) বিষয়টি সমাধান করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। 

ওই নারী দাবি করেন, ব্যাংকের ক্যাশ শাখার কর্মকর্তা বরুণ কুমার ও মনিরুল ইসলাম পরস্পর যোগসাজশে তার ৫৮ হাজার ৮৩৬ টাকা উঠিয়ে আত্মসাৎ করেছে।

এসব ব্যাপারে ব্যাংকের ওই দুই কর্মকর্তা তাদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সত্য নয় বলে কোনো কিছু বলতে রাজি হননি।

সোনালী ব্যাংক সোনাগাজী শাখার ব্যবস্থাপক ফরহাদ উদ্দিন জানান, তিনি যোগদানের আগে ঘটনাটি ঘটেছিল। তারপরও তিনি বিষয়টি জানার পর ওই দুই কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তারা টাকা আত্মসাৎ করেননি বলে জানিয়েছেন। বিষয়টি তিনি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকেও জানাবেন।