কেউ কাউকে তারকা বানাতে পারে না

1784

তাঁর নাম ভেঙ্কটেশ প্রভু। চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে তাঁর প্রণয়ের সম্পর্ক প্রায় দেড় যুগ হতে চলল। তাঁর গাওয়া ‘কোলাভেরি ডি’ গানটি ইউটিউবের প্রথম কনটেন্ট যেটি ১০ কোটির বেশিবার দেখা হয়েছে। ভারতীয় বিনোদন জগৎ তাঁকে একনামে চেনে ধানুশ নামে। অনেকবার ব্লকবাস্টার ছবির নায়ক হয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছেন। শিরোনাম হয়েছেন প্রযোজক, পরিচালক, লেখক ও গায়ক হয়েও। সোনম কাপুরের সঙ্গে ধানুশের ‘রানঝানা’ ছবিটি যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা ভুলতে পারবেন না বড় পর্দার সেই প্রেমিক কুন্দনকে।

এই মাসের ২১ তারিখ ধানুশের জীবনের একটা বিশেষ দিন। কেননা এদিন মুক্তি পাবে ধানুশ অভিনীত ‘দ্য এক্সট্রাঅর্ডিনারি জার্নি অব দ্য ফকির’। এই ছবিটি ফরাসি লেখক রোমেইন পুয়েরতলাসের একই নামের বেস্টসেলার উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। কেন স্কট পরিচালিত এই ছবিতে বেশ কয়েকজন আন্তর্জাতিক অভিনয়শিল্পী আছেন, যাঁদের অনেকেই অস্কার মনোনয়ন পেয়েছেন। এই ছবিটি ইতিমধ্যে নরওয়ে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পেয়েছে। আর ২১ জুন ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরে মুক্তি পাবে। এই ছবিকে সামনে রেখে ডেকান ক্রনিকলে প্রকাশিত একটা দলগত সাক্ষাৎকারে ধানুশ বললেন তাঁর দীর্ঘ ১৭ বছরের ক্যারিয়ার এবং ছবিটি নিয়ে।

ধানুশ মনে করেন, মেধা থাকুক বা কম থাকুক, একজন অভিনেতাকে কঠোর পরিশ্রম করতেই হবে। অভিনেতা কখনো অলস হতে পারবেন না। কোনো মেধাবী এবং কম পরিশ্রমী অভিনেতার জায়গা আরেকজন মেধাবী এবং বেশি পরিশ্রমী অভিনেতা নিয়ে নেবেন। কেননা, ইন্ডাস্ট্রিতে মেধার কোনো অভাব নেই। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এই অভিনেতা আরও মনে করেন, কেউ কাউকে তারকা বানাতে পারে না। এই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘একজন তারকা হয়তো আরেকজনকে সামনে আনতে পারেন। একজন অভিনয়শিল্পীর শুরুটা হয়তো একজন বিখ্যাত তারকার সঙ্গে হতে পারে। কিন্তু একজন শিল্পীকে টিকে থাকতে হয়, তারকা হতে হয় সম্পূর্ণ নিজের যোগ্যতায়। কেউ কাউকে তারকা বানাতে পারে না।’

অর্থাৎ তারকার সন্তান বা আত্মীয়রা যে তারকা হবে সেটা ধানুশের কাছে একটা মিথ। ৭ বার ফিল্মফেয়ার জয়ী এই অভিনেতার মতে, মানুষের রুচি, পছন্দ, চাহিদা বদলেছে। তারকা বলেই যে তাঁর ছবি চলবে, সেসব দিন আর নেই। ‘দ্য এক্সট্রাঅর্ডিনারি জার্নি অব দ্য ফকির’ ছবির ফকির ধানুশ। ছবিটি ধানুশের কাছে নিজের স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গা থেকে বের হয়ে নিজেকে ভেঙে গড়ার একটা দারুণ সুযোগ। ধানুশ বলেন, ‘আমি আমার সারা জীবন ধরে শুধু শিখতে চেয়েছি। আর সে ক্ষেত্রে এই ছবিটি খুব দারুণ একটা সুযোগ। আমি ভাবতাম, অনর্গল কথা বলার মতো ভালো ইংরেজি আমি জানি না। কিন্তু এই ছবিতে কাজ করার সময়-ই আমি জানতে পারলাম, সমস্যাটা মানসিক।’

ধানুশের মতে, দর্শক একটা চলচ্চিত্র থেকে কী চায় এবং সেই চলচ্চিত্রে একজন অভিনেতার কাছ থেকে কী চায়- এটা জানা খুব জরুরি। একজন অভিনয়শিল্পী যদি এই প্রশ্নের উত্তর জেনে দর্শকের চাহিদা পূরণ করতে পারেন, তবে তিনি টিকে থাকবেন। আর না পারলে তাঁকে চলে যেতে হবে। কোনো প্রবাদতুল্য তারকা অভিনেতাও খারাপ ছবি দিয়ে টিকে থাকতে পারবেন না। এই নিয়মের কোনো ব্যতিক্রম নেই।