আমাদের অজানা কিছু অবাক করা তথ্য

1712

এই বৈচত্রময় পৃথিবীর অনেক তথ্যই আমরা জানি না। প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে নানা ঘটনা ও নানা পরিবর্তন। আমরা তো এটাই জানি না যে,হাতের কাছে যে প্যাকেটজাত চিপস পাওয়া যায় তার ভেতর কোন গ্যাস ভরা থাকে। আমেরিকা নামক দেশটির নাম আমরা কেই বা না জানি।

কিন্তু আমরা কেউ কি জানি, সে দেশেও এমন একটি শহর রয়েছে যেখানে মোটরযান চলা এখন পর্যন্ত নিষিদ্ধ। ব্যস্ততা বা অনিচ্ছার কারণে এই পৃথিবীর অনেক তথ্যই আমাদের অজানা রয়ে গেছে। তাহলে চলুন আজ জেনে নেই এমন কিছু অজানা তথ্য যা আপনাকে চমকে দেবে।

১. আইবিএম সর্ব প্রথম ১৯৫৬ সালে হার্ড ডিস্ক উদ্ভাবন করে এবং ১৯৬০ দশকে সাধারন কম্পিউটারের দ্বিতীয় সংরক্ষণ মাধ্যম হিসেবে  কম্পিউটারগুলোতে ব্যবহৃত হতে থাকে। প্রতিনিয়ত এটির উন্নয়নের ফলে আজকের দিনের সার্ভার থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত কম্পিউটারে এর ব্যবহার লক্ষণীয়। বর্তমানে অধিকাংশ কম্পিউটারে তথ্য সংরক্ষণের স্থায়ী ব্যবস্থা হিসাবে হার্ড ডিস্ক ব্যবহৃত হয়। কিন্তু আপনারা জানলে অবাক হবেন যে, ১৯৮১ সালে ১ গিগাবাইট বা ১ জিবি স্টোরেজের মূল্য ছিল ৩ লক্ষ ডলার বা ২ কোটি টাকা। ওই সময় বড় বড় সব ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রে ১ জিবি ইনস্টল করাটাও অনেক বড় সমস্যার ব্যাপার হয়ে দাঁড়াত। কারণ তৎকালীন সময়ে ১ জিবি মোটো আজকের দিনের মত কয়েক সেন্টিমিটার কার্ড আকারে পাওয়া যেত না।

২. আমেরিকার মিশিগান রাজ্যের মেকানিক দ্বীপ, এখানে আপনি চাইলে ছুটি কাটাতে বা ঘুরতে পারেন। এই দ্বীপের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারেন। কিন্তু আপনি যে কাজটি করতে পারবেন না তা হলো এখানে গাড়ি চালানো। এখানকার মানুষ এখানে গাড়ি চালানোর কথা চিন্তাই করতে পারে না। ১৮৯৮ সাল থেকে আজ পর্যন্ত মোটর চালিত সকল প্রকার যান নিষিদ্ধ। অর্থাৎ কোনো প্রকার মোটর চালিত যান যেমন মোটরসাইকেল, গাড়ি ইত্যাদি যেকোনো কিছু এখানে চলাচল করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। মানুষ শুধুমাত্র পায়ে হেঁটে অথবা সাইকেলে করে যাতায়াত করে। এই কারণেই এ রাজ্য কোনো দূষণ নেই।

৩. কালার ব্লাইন্ড সম্পর্কে আমরা প্রায় সবাই পরিচিত। কালার ব্লাইন্ড বা বর্ণান্ধ হলো তারা যারা নির্দিষ্ট কিছু রং দেখতে পায় না বা বুঝতে পারে না। আমাদের সবার পরিচিত ফেসবুকের সৃষ্টিকর্তা মার্ক জাকারবার্গ লাল এবং সবুজ এ দুটি রং বুঝতে পারেন না। রাশিয়ায় গিয়ে একটি টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি কালার ব্লাইন্ড বা বর্ণান্ধ। লাল, সবুজ রং আমার চোখে ধরে না। তার চোখে নীলই হল সেরা রং৷ অর্থাৎ তিনি গ্রীন এবং রেড ব্লাইন্ড। তাই তিনি ফেসবুকের রং নীল রেখেছেন। এজন্যই আমরা সবসময় ফেসবুকের রং নীল দেখি। কারণ ওটাই একমাত্র রং যেটা জাকারবার্গ খুব ভালো দেখতে পায়। তিনি জানালেন  ‘নীল রং ভীষণ প্রিয়’ তার। সত্যি করে বলুন তো, এই সিক্রেটটা আপনার জানা ছিল?

৪. উপরের তথ্যগুলো শুনে যদি আপনি অবাক না হন তাহলে এই তথ্যটা সঙ্গে অবশ্যই আপনি চমকে যাবেন। আপনি যদি একজন লন্ডনের ক্যাপ ড্রাইভার বা টেক্সি ড্রাইভার হতে চান তাহলে আপনাকে ২৫ হাজার রাস্তার ম্যাপ মনে রাখতে হবে। শুধুমাত্র পরিসরে রাস্তা নয় তার সঙ্গে ২০ হাজার ল্যান্ডমার্ক মনে রাখতে হবে। ড্রাইভার হওয়ার জন্য দা নলেজ নামক পরীক্ষায় পাস করতে হয়। এই পরীক্ষায় ওই ২৫০০০ রাস্তার ভেতর থেকে যে কোন রাস্তা সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হবে। এই পরীক্ষাটি কমপক্ষে দুই বছর দিতে হবে আপনাকে।

৫. ২০১০ সালে লোরা লিন্ডা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় জানা যায়, হাসির মাধ্যমে শুধুমাত্র শরীরের মানসিক চাপ কম হয় না বরং আমাদের শরীরের ভেতর এন্টিবডি বৃদ্ধি পায়। আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম আগের থেকে অনেক বেশি কাজ করে। অর্থাৎ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যখনই রাগ, হতাশা বা দুঃখ মনকে ঘিরে ধরেছে, তখনই এমন কিছু করবেন যাতে খুব হাসি পায়। কারণ মানসিক চাপ কমাতে হাসিই একমাত্র ওষুধ। গবেষণায় দেখা যায়, হাসার সময় আমাদের শরীরে “ফিল গুড” হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই হরমোনগুলো নানাভাবে শ্বেত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। এতে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।

৬. আলু খুব পাতলা স্লাইস করে কাটার পর তা মসলা যোগে ডুবো তেলে ভাজার মাধ্যমে মচমচে আলুর চিপস প্রস্তুত করা হয়। এটি মূল খাবার হিসেবে নয়, বরং মূল খাবারের পার্শ্ববর্তী একটি পরিবেশনা হিসবে পরিবেশিত হয়। এছাড়া নাস্তা বা স্ন্যাক্স ধরনের খাবার হিসেবেও এর প্রচলন রয়েছে। আমাদের অনেকেরই হয়তো আলুর চিপস নিয়ে একটা অভিযোগ থাকে। চিপসের পরিমাণ কম দিয়ে কেন এর প্যাকেটের ভেতরে বাতাস ভরে দেয়?

আসলে আমরা যে বাতাস প্যাকেটের ভিতরে দেখতে পাই তা কোনো সাধারণ বাতাস নয়। এটা হচ্ছে নাইট্রোজেন গ্যাস। নাইট্রোজেন গ্যাস হল সেই জিনিস যা দীর্ঘদিন পটেটো চিপস কে সুস্বাদু এবং মচমচে রাখে। তাছাড়া এ গ্যাস আরো একটি কাজ করে। চিপসের প্যাকেট আপনার হাতে আসার আগে তাকে ফ্যাক্টরির সদর দরজা পেরিয়ে অনেক পথ অতিক্রম করতে হয়। তখন যাতে একটি আরেকটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে গুঁড়ো হয়ে না যায় সে জন্য নাইট্রোজেন ব্যবহার করা হয়। অক্সিজেনের প্রভাবে চিপস নষ্ট হয়ে যায়, এছাড়া তেলেও দেখা দেয় দুর্গন্ধ। সেই সঙ্গে বাতাসের আর্দ্রতা চিপসকে ড্যাম্প করে দেয়। ফলে সেই চিপস খেয়ে কোনো মজাই পাওয়া যাবে না। অন্যদিকে নাইট্রোজেনের কিন্তু এসব কোনো সমস্যাই নেই। বরং এটি চিপসকে রাখে সতেজ ও কুড়মুড়ে।